পুনা-মুম্বাই তে কিছুদিনের জন্য গেলেই এই জায়গায় সব্বাই যায়, হিন্দি সিনেমার (বলিউডের) দৌলতে এ জায়গার নাম জানে না এমন মানুষ কমই আছেন, বর্ষাকালে এক 'সবুজ স্বর্গ', নানা রঙের সবুজ, কত রকমের যে হিউ বা শেড আছে, গুগলেও পাওয়া যাবে না তার নাম, অজানা গাছ-পালা আর পশু-পাখির সমাহারে ইতিমধ্যে পৃথিবীর ১৮ খানা "বায়োডাইভার্সিটি স্পট "-এ পশ্চিমঘাট পর্বতমালার নাম আছে।
'বায়োডাইভার্সিটি স্পট' সম্পর্কে জানতে হলে আমার এই ব্লগটা দেখতে পারেন https://www.theroamingdiary.com/.../western-ghat...
একালের এক পপুলার হিন্দি গান 'আতি কিয়া খান্ডালা...' আমি actually লোনাভলা-খান্ডালার কথা বলছি, দুটো পাশাপাশি আলাদা জায়গা। লোনাভলা রেলস্টেশনে মুম্বাই আপ-ডাউন সব ট্রেন দাঁড়ায়, খান্ডালায় হাতেগোনা কিছু
ট্রেন দাঁড়ায়। ওহ হ্যাঁ, বিগ বস নামক so called এক ঝগড়া-নাটক বা ন্যাকামো যেটা তিন চার মাসে ধরে চলে তার স্টুডিওটাও এই লোনাভলায় |
এই লোনাভলা নামটার বুৎপত্তি : আসলে এখন লোনাভলাকে যেভাবে পোর্ট্ট্রেট করা হয়, তার সাথে লোনাভলা নামের মিল নেই। বেশিরভাগ মানুষ জন লোনাভলা যান, পাহাড় দেখতে, রিসোর্টে থাকতে, ছবিছাপা তুলতে। কিন্তু, এই নামটা তাৎপর্যপূর্ণ, 'লেনি' শব্দটা এসেছে গুহা থেকে আর 'আভালি' যার অর্থ হলো সিরিজ। অর্থাৎ 'এক সিরিজের গুহা' বলা যেতে পারে । দুটোই মারাঠি শব্দ, সংস্কৃতের সাথে মিল রয়েছে। লোনাভলাকে বেস করে যে পাহাড় গুলো রয়েছে সেগুলোর পূর্বদিকটা খোলা, "Indian rock-cut architecture"-র নিদর্শন পাবেন । ঝড়-ঝাপটা ও পশ্চিমি ঝঞ্ঝা থেকে রক্ষা পাবার জন্য ও বর্ষা কালের চারটি মাস আশ্রয়ের জন্য বৌদ্ধ ভিক্ষুদের থাকার ব্যবস্থা ছিল এই সব গুহা (মনাস্টেরী ) গুলোতে । 'বিহার' (পাঠ করার জায়গা ) ও 'চৈত্য গৃহ' (প্রার্থনা ঘর ) গুলো কয়েক জায়গায় অক্ষত এখনো । অজান্তার মতো মিউরাল পেইন্টিং নেই তবে, ছাত্রদের থাকার, ধ্যান করার ও শোয়ার জায়গা গুলো আছে । কতদিন থাকবে কেউ জানে না, তাই ওদিক গেলে শুধু পাহাড়, রিসোর্ট, ট্রেক, রাফটিং, খাওয়া-দাওয়া, পার্টি না করে এ গুলো দেখে আসবেন । পালি, সংস্কৃত আমরা জানিনা ধরেই নিচ্ছি, সুতরাং ইনস্ক্রিপশন গুলো পড়তে পারবেন না, অন্তত দেখে আসুন।
লোনাভালার কাছাকাছি rock-cut গুহা গুলো হলো : বেডসে , ভজা ও কারলা (পুরো মহারাষ্ট্র বা পশ্চিম ঘাটে এমন অনেক-অনেক গুহা রয়েছে যেগুলো বয়স প্রায় আড়াই হাজার বছরের বেশি ) | সব গুলোর পূর্বদিকটা খোলা যাতে সূর্যের আলো আসে কারণ প্রাচীন কালে পূর্বদিকে মুখ করে সবাই ধ্যানে বসতেন। পশ্চিম দিকটা পুরো বন্ধ, ঝড় আটকানোর জন্য । Water management মানে বৃষ্টির জল ধরে রাখার সুবন্দোব্যস্ত ছিল বলাই বাহুল্য সেই ওয়াটার সিস্টার্ন গঠনটা এখনো রয়েছে। যেহেতু 'স্পাইস রুট' বেশিরভাগটাই পশ্চিমঘাটে অবস্থিত তাই অতীতে ব্যাবসায়ী /ব্যাপারীরা, ট্রাভেলেররা এই রাস্তা ধরেই এদেশে যাওয়া-আসা করতো তাই আশ্রয়ের জন্য এই মনাস্টেরী গুলোতে থাকতো , তাদের অনেক অবদান রয়েছে , এই মনাস্টেরী তৈরি করাতে, আর্থিক ভাবে সাহায্যে ও রক্ষা করায়। সেসব বৃত্তান্ত পালি-সংস্কৃতে লেখা রয়েছে, পাথরে ।
Bhaja cave |
Comments
Post a Comment