Skip to main content

স্বপ্নার গপ্পো

প্রথমেই বলি দিই, আমি ভূত-ভগবানে বিশ্বাস করি না, কিন্তু ... ঘটনাটা বলি তাহলে


A cup of coffee from Naggar castle



এবছরের জানুয়ারি মাসে কয়েকদিন নাগ্গারে (হিমাচল প্রদেশেরছিলাম আমার শুধু রাতে কয়েক ঘন্টা থাকার জন্য একটা ঘর চাইব্যাস  ঠিকঠাক জায়গা জুটিয়ে কাজকম্মোও হয়ে যায়  ছিলাম 'পাইন প্যালেসনামে এক পরিত্যাক্ত হোটেলে  পরিত্যাক্ত কথাটা ঠিক উপযুক্ত নয় এই ক্ষেত্রেপুরোটা বলছি আমার এক বন্ধু লিজে এই হোটেলটা নিয়েছিল, এখন আর নেই এখন যার সম্পত্তি তিনি তেমন ভাবে  পাইন প্যালেস কে ব্যবসার জন্য ব্যবহার করেন না  আচার্য্য (আমার পদবিও তাই ) মশাইসেখানকার নামী এবং দামী পুরোহিতপয়সার দরকার নেই বললেই চলে , তাই খুব চেনা জানা কেউ গেলে এই হোটেলে থাকতে দেন  তার ছোট ছেলে রাতে পাহারাদার হিসেবে এখানে থাকেন  লোকেশন হিসেবেনাগ্গার প্যালেসের ঠিক নিচের 'হেয়ার-পিন ' লুপ টায় হোটেল পাইন প্যালেসহেঁটেই যাতায়াত করা যায় 

একটা ছবি বলার চেষ্টা করিপাহাড়ে প্রথম ধাপে হোটেল পাইন প্যালেসওপরের দুটো ধাপ পরে নাগ্গার প্যালেস ( বর্তমানে হিমাচল স্টেট গভমেন্টের হোটেলবলিউডের প্রচুর সিনেমার শুটিং হয়েছে এখানে ), তার ঠিক ওপরের ধাপে রয়েছে বহু পুরানো এক মন্দির নাম , 'ত্রিপুরা সুন্দরী মন্দির ', তার ওপরে রয়েছে নাগ্গার হাসপাতালসবচেয়ে ওপরের ধাপে বা পাহাড়ের চূড়ায় রয়েছে নিকোলাস রোয়েরিচ- বসবসকারী বাড়িটিযা এখন 'আর্ট গ্যালারি',  তার সংলগ্ন  ইনস্টিটিউট গুলো   নিকোলাস রোয়েরিচ- নাম আসা করছি জানেনযিনি জাস্ট  হিমালয়ের প্রেমে পরে নিজের দেশ ছেড়ে সপরিবারে এদেশে পাড়ি দিয়েছিলেন  তার ছোট ছেলেকে দেবিকা রানী (জনপ্রিয় অভিনেত্রী ছিলেনঅনেক হিন্দি সিনেমা করেছেন ) বিয়ে করেছিলেন  আচ্ছাদেবিকা রানীর আর একটা বড়ো পরিচয়তার ঠাকুমা সুকুমারী দেবী ছিলেন কবিগুরুর ভগ্নি 

পাহাড়ের এই আঁকাবাঁকা মেন রাস্তাটার নাম 'পুলাগ রোড', এই রাস্তার বাঁদিকে অনেক ছোটো ছোটো পায়ে হাঁটা পাহাড়ি পথ যেগুলো আপেলের খেতে আর আশেপাশের পাড়া গুলোতে চলে গেছেজল জমে বরফে পিছল হয়ে থাকে রাস্তাউঠতে নামতে বহুবার আছাড় খেয়েছি  ওখানেই পুষ্প-দিপু-বিন্দু দের বাড়িওদের মা অমলা দেবী পঞ্চায়েত প্রধান  বড়ো ভালো মানুষআড্ডা মারার জন্য আর সকাল-দুপুর- রাতের খাবারের জন্য ওদের বাড়িতে যেতেই হতোনাহলে  তিন ভাই বোনের যে কেউ খুঁজতে বেরিয়ে পড়তো  পুষ্প পাশের স্কুলে গানের টিচার , দিপু কুলুর এক স্কুলে পড়ায় আর ফাটাফাটি তবলা বজায় , পুরো কুলু উপত্যকায় একমাত্র দিপু তবলা বাজায়প্রচুর পারফর্ম করে  বিন্দু মানালিতে থাকে ছুটিতে বাড়ি আসে 

রোজ পাইন প্যালেস থেকে পুষ্পদের বাড়ি যাওয়া আসা করতে করতে আমি বেশ কিছু শর্টকাট রাস্তা খুঁজে পেয়েছিলামরাস্তা গুলো চড়াই বেশি তবে তারাতারি হতো  রোজই ওদের বাড়ি পৌঁছে বলতাম , আজ এদিক দিয়ে এলাম বা ওদিক দিয়ে এলাম  ওরা তো সবই চেনে ! 

 নিকোলাস রোয়েরিচ- প্রাধান্যে নাগ্গার জায়গাটায় প্রচুর রাশিয়ান  জার্মানদের দেখা যায়অনেকেই এখানে সপরিবারে বসবাস করে  কিছু গলি আছে যেখানে গেলে মনে হবে  কোথায় এলাম বাবা ! সবাই অন্য রকম দেখতে যে

আমার কল সেরেসেদিনের মতো কাজ গুটিয়ে ল্যাপটপ বন্ধ করে বেরোবো দেখি ঝিরঝিরে বৃষ্টি ঝরছে , হালকা তবে আর কিছুক্ষন হলেই ঝুরঝুর করে বরফ পরবে নিঃসন্দেহে  কিছুক্ষন অপেক্ষা করে যখন বুঝলাম বৃষ্টি আজ টা-টা করবে না , অগত্যা বৃষ্টি তেই বের হলাম  হোটেল থেকেই একখানা ছাতা জোগাড় করে নিয়ে হাঁটছিআহা কি যে ভালো লাগছিলো , তবে বেজায় ঠান্ডা , গ্লাভস নিই নি , ফলে একটা হাত প্রায় অবস হবার জোগাড়হাত ঘুরিয়ে একবার পকেটে চালান আর একবার  ছাতার ডান্ডা ধরছিভেবেছিলাম ভিডিও করবো কিন্তুসে অবস্থা নেইযদি বৃষ্টি জোরে শুরু হয় এই ভেবে জোরে হাঁটা দিয়েছি  ওই যে বলেছিলামশর্টকাট রাস্তা গুলোর কথাসেগুলোর মধ্যে একটা রাস্তায় আমার ঢোকা বারণ ছিল | পুষ্পরা সবাই মানা করেছিলকিন্তু ওই রাস্তা নিলে আরো জল্দি ওদের বাড়ি যাওয়া যায়  ঠান্ডা জমে যাচ্ছিআমার ধান্দা কতক্ষনে তান্দুরের ( লোহার তৈরি এক ধরণের ঘর গরম করার  উনোন ) পাশে গিয়ে বসবো  মাথায় একটাই জিনিস ঘুরে ঘুর করছে শুধুশর্টেস্ট-শর্টকাট ... শর্টেস্ট-শর্টকাট  ... 

 "ভার মে যায় " ভূত-পেত্নিফটাফট যে রাস্তা ওরা নিতে বারণ করেছিল সেটাই নিলাম  ১০-১২ পা হেঁটেই পুষ্পদের বাড়ির আলো চোখে পড়লোতন্দুর আরো কাছে চলে এলো আর মাত্র কয়েক পাহাঁটার জায়গা দৌড়োতে শুরু করেছিতবে বেশি জোরে দৌড়োনোর পাকামো করছি নাঅনেক বার আছাড় খেয়ে অনেক জায়গায় বেশ ব্যাথা... এমন সময় " কাঁহা যা রাহে হো ?"

শুনে পাত্তা না দিয়ে একটু স্লো হলামথামবো ? ভাবছি !

আবার শুনলাম  " কাঁহা যা রাহে হো ?", আমাকেই বলছেন কয়েক হাত দূর থেকে এক বয়স্ক মহিলার গলা |

ঘরের বারান্দায় হালকা আলোভালো করে দেখার জন্য এগোলাম  দেখি একজন বারান্দায় চেয়ারে বসে আছেনপাশে চা বা কফির কাপ-প্লেটফ্লাস্ক 

এবারে পরিস্কার শুনলাম, "ঘর কাঁহা হ্যায়  ?"

অলরেডি দুটো প্রশ্ন হয়ে গেছেদুটোরই উত্তর দিলাম 

এবারে আমি জিগেস করলাম " ঠান্ড নহি লাগ্ রাহে হ্যায়? " 

"নহি লাগতা হ্যাঁ মুঝে ঠান্ড

পরক্ষনেই চায়ের অফার করলেন

আমি না করলাম  মুচকি হেসে তার দিকে ভালো করে তাকালামকানে নীল পাথরের দুলপরনে একটা গাউন তার ওপর শুধু একখানা কুলুর বিখ্যাত চাদর জড়ানো  গ্লাভস নেইপায়ে মোজা আছে আছে কিনা দেখা যাচ্ছে না |

এমন অসীম ক্ষমতা দেখে আমি আবার জিগেস করলাম " আপকো কিউ ঠান্ড নহি লাগ্ রাহে হ্যায়জায়িয়ে কুছ সোয়েটার ইয়া জ্যাকেট পহেন লিজিয়ে

আবার সেই এক উত্তর "মুঝে ঠান্ড নহি লাগতি

মুখ দিয়ে "ভার মে যায়ে " ... বেড়িয়ে যাচ্ছিলোতাও বললাম  "ম্যায় চলতি হুমুঝে বহুত ঠান্ড লাগ্ রাহা  হ্যায়এই বলে পা চালালামপেছন থেকে শুনলাম "যাওসব চলে যাও..."  ঠান্ডায় বুড়ির মাথা গেছে ভাবতে ভাবতে আমি গন্তব্যে পৌঁছে গেছি 

কাকিমা যথারীতি জিগেস করলেন, " কৌন সা শর্টকাট লিয়েআজ ?" 

মিথ্যে না বলে সত্যি কথাই বললামতাড়াতাড়ি হবে বলে আপনি যে রাস্তা বারণ করেছিলেন সেই রাস্তা দিয়েই এলামকিন্তু এক বুড়ির সাথে দেখা হলো - মিনিট বকবক করলাম তার সাথে 

দেখি ওরা সবাই মানেকাকিমাপুষ্পদিপু তিন জনই আমার দিকে হ্যাঁ করে তাকিয়ে আছে 

 " কিয়্যা হুয়া ?" 

প্রথমেই বকা খেলামমানা করা সত্ত্বেও ওই রাস্তা দিয়ে এসেছি বলে  আর পরের বকা আরো জোরালো কেন ওই বুড়ির সাথে গপ্পো জুড়েছিলাম ? 

বলছিআমি বেশি কথা বলিনিকে শোনে কার কথা !

আচ্ছা ! কৌন বল রাহা হ্যায়কে ম্যায় যাদা বাত নহি করতি হু ?"

... 'সরি, খুব সরি ', কিছুক্ষন পর সব ঠিক হলো 

খাওয়া হয়ে যাবার পর জিগেস করলাম কাকিমাকে "কে সেই বুড়ি ?"

পাশে কাকু ছিলেনকাকিমা কাকুকেই বলেলন বলতেকাকিমার বাপের বাড়ি কুলুতেপ্রায় ৩০ কিমি দূর  বিয়ের পর এখানে এসে তিনিও  ঘটনা শুনেছেন মাত্র 

যা শুনলাম কাকুর থেকেসেটা হলোঅনেক বছর আগে কাকুর বয়স তখন বছর পাঁচেক, কাকুর দিদির এক বন্ধুর নাম ছিল স্বপ্নাআর পাঁচটা পাহাড়ি মেয়ের মতো নাম লেখা শিখেছেবাড়ির কাজ কর্ম জানেপাত্র খোজ হচ্ছে বিয়ের জন্য  কিন্তু সে নাকি বিয়েতে রাজি নয়বাড়িতে নিত্য দিন ঝামেলা  এই করতে করতে কাকুর দিদির বিয়ে হয়ে গেলোপ্রায় তিন-চার বছর কেটেও গেছেস্বপ্না কিন্তু তখনো বিয়ে করে নি 

বসন্ত কালে পুরো হিমাচল এমন সেজে ওঠে যে চারদিকে তাকালেই "মনে পুলক জেগে ওঠে ", সত্যি বলছি রং-বেরঙের বাহারি ফুলপাতাভ্রমর-মৌমাছিপাখি যাকে বলে... স্বর্গএজন্যই তো হিমাচলের আরেক নাম "দেবভূমী "  সেরকম এক মোহময় বসন্তের দিনে স্বপ্না একজন রাশিয়ানকে বিয়ে  করে সংসার পাতলো  ওখানেই এক চিলতে জমি কিনে তারা দুজনে পাইন কাঠ দিয়ে ছোটো দুকামরার এক দোতালা ঘর বাঁধলো  বাড়ির লোকজন প্রথমে অমত দিয়েছিলো , পরে যখন দেখলো তারা কাছাকাছি রয়েছে তখন সানন্দে উৎসব সমাহারে রাশিয়ান জামাইকে বরণ করে নিলো  প্রচুর লোকজন আমন্ত্রিত ছিল 

দেখতে দেখতে তাদের এক কন্যা সন্তান হলোসে নাকি পরীর মতনতাই তার নামও ছিল পরী  তা তো হবেই !  বাবা রাশিয়ান আর মা হিমাচলের  বেশ কিছু বছর পরবাচ্চা মেয়েটা হাঁটতে শিখে গেছেতখন তার বাবা রাশিয়া গেলো বাড়িতে জরুরী কাজ আছে বলে কিন্তু এক বছর হতে চললো ফিরছে না  আগেও দু-চার বার গেছে কিন্তু মাস খানেকের মধ্যে ফিরে এসেছেএবারের মতো দেরি নাকি কখনই হয় নি 

 

স্বপ্না ভেবে অস্থির ! যে ফোন নম্বর দিয়ে গেছেপাবলিক বুথ থেকে কল করে সেখানে কোনো উত্তরও পায় নারুশ ভাষা স্বপ্না জানে না ফলে ওদিক থেকে কোনো উত্তর পাবার আশা নেই  চিঠিও নাকি পাঠিয়েছে  চেনা জানা অনেক রাশিয়ান দেশে ফিরে যাবার সময় স্বপ্নাকে কথা দিয়েছে গিয়ে খোঁজ নিয়ে জানাবে তার বরের খবরকিন্তু কোনো রকম যোগাযোগ করতে আর পারে নি  তারপর নাকি আরো বছর খানেক পরপ্রায় চার বছর পরসে ফিরে এলো এবং বললো সে তার দেশে আবার বিয়ে করেছেস্বপ্না  পরীকে নিয়ে যেতে পারবে না বলেই  ভেবেছিলো তাড়াতাড়ি ফিরে আসতে পারবে কিন্তু সে আর হয় নিআর স্বপ্না দুঃখ পাবে বলে কোনো মারফৎ জানায় নি তার বিয়ের ব্যাপারটা ।

কয়েক মাস পর স্বপ্নার রাশিয়ান বর আবার দেশে গেলো কিন্তু এখন পর্যন্ত আর ফিরলো না   এদিকে পরী বড়ো হয়ে ডানাকাটা পরী হয়েছে যে ! চোখ ফেরানো দায় | ওই পাড়ারই এক জার্মানকে বিয়ে করে সেই যে নাগ্গার ছেড়ে গেলো সেও নাকি আর মায়ের খোঁজ নেয় নি কোনোদিন  বর আর মেয়ের জন্য প্রতীক্ষায় স্বপ্না ওই বারান্দায় বসে থাকতো   চা-কফির বড়ো সাধ ছিল , বিয়ের পর-পরই কত্তা-গিন্নি ওই বারান্দায় ডিম্ লাইট জ্বেলে আরাম কেদায়ার বসে পাহাড় দেখতো , পাখির গান শুনতোরাত জেগে জোনাকি গুনতো , বরফ পড়লে দুজনে দরজার কাঁচে আঁকিবুকি কাটতো , আর রাস্তা দিয়ে যাকেই যেতে দেখতোতাকে ডেকে কথা বলতো,  কখনও  চা-কফির অফার করতো 

মেয়ে চলে যাবার পর বহু কাল স্বপ্না ওই বারান্দায় বসে ছিলএমনকি কোনো কোনো দিন রাতও সে বারান্দায় কাটাতোযদি তার বর বা মেয়ে এসে দেখে সে ঘুমোচ্ছে আর তাকে না ডেকে আবার চলে যায়তাই !

সবার মুখ দেখার জন্য ডেকে কথা বলতোচা-কফি খেতে বলতোযদি কেউ তাদের কোনো খবর দিতে পারে তাকেএই ভেবে !

তারপর একদিনপাড়ার কেউ খেয়াল করলো স্বপ্নার বাড়ির দরজায় তালা ঝুলছে | কোথায় গেছে কেউ জানে না  কখন গেলো তাও কেউ জানে না  বাপের বাড়িতে তেমন কেউ নেই যে স্বপ্নার খবর রাখবে ! হয়তো কোথাও গেছেফিরে আসবে ! এই ভেবে আসে পাশের সবাই যে যার কাজে আবার ব্যস্ত হয়ে গেলো 

হটাৎএকদিন এক ট্র্যাভেলার সন্ধ্যের দিকে এক বাড়ির সামনে দিয়ে যাবার সময় কেউ তাকে ডাকলোসে থেমে কিছুক্ষন কথা বলার পরতাকে চা খেতে দিয়েছিলোকিন্তু কাপে কোনো চা বা জল জাতীয় কিছু ছিল না | সেই ট্র্যাভেলার কিছু একটা বুঝে কাপ-প্লেট সেখানেই রেখে চলে যায়  তিনি যে গেস্ট হাউসে ছিলেন সেখানে গিয়ে ঘটনাটা বলায় " তারা বললোস্বপ্না কি ফিরে এলো তাহলে ?" সবাই মিলে সেই রাতেই স্বপ্নার বাড়িতে এলো  বাড়িতে ঢোকার দরজায় তো যথারীতি তালা দেওয়ামানুষের থাকার কোনো চিহ্নও নেইচারপাশে নোংড়া হয়ে আছেতাহলে ? আর এই ট্র্যাভেলার যেসে তো এখানে নতুন দিন দুয়েক হলো এসেছেতার তো ঘটনাটা জানার কথা নয় যে বানিয়ে বলবেকে তাহলে চা অফার করলো তাকে ?

বেশ গরুত্বপূর্ণ ব্যাপার , অনেকদিন পর সবার স্বপ্নাকে মনে পড়লো , যারা তাকে চিনতো তাদের অনেকেই চলে গেছেন বা তাদের অনেক বয়স হয়ে গেছে  ছোটরা আবার নতুন করে জানলো স্বপ্নাকে 

তবে এরপর থেকে অনেকেই মাঝে মাঝে ওই রাস্তায় দিয়ে গেলেই স্বপ্নাকে দেখেছে এবং চা খাবার জন্য অফারটাও পেয়েছে  আজও স্বপ্না বারান্দায় ডিম্ লাইট জ্বেলে বসে রয়েছে 'প্রতীক্ষায়... ' তাই তার ঠান্ডাও লাগে না |

পরদিন সকালে আমি গিয়েছিলাম স্বপ্না নামক ওই মহিলার বাড়িতেদরজায় তালা , চারপাশে আবর্জনাতবে বারান্দায় চেয়ার পাতা রয়েছে  তবে গত রাতে যে বারান্দায় কেউ বসেছিল তার কোনোরকম প্রমান নেই 


নোট : চারদিকে আপেলের খেত মাঝে দামি আন্টিকে জিনিসপত্রে সাজানো গোছানো  সুন্দর-সুন্দর কাঠের অনেক দোতলা বাড়ি রয়েছে নাগ্গারে এমন বহু পরিবার রয়েছে তাদের spouse (বর বা বৌভিনদেশি  কেউ কেউ নিয়ম করে বছরে এক বার-দুবার আসে কেউ আর আসেই নি  এই বাড়ি গুলো সব গেস্ট হাউস 

Comments

Popular posts from this blog

কদম ফুল - Kadam phool- common burflower

বর্ষাকালের সিগনেচার বলা হয় কদম ফুলকে , আরেক নাম নীপ , " এসো নীপ বনে ... " কবিতা তো জানাই আছে যাতে বর্ষা মানেই নীপ ( কদম্ব ও বলে অনেক রাজ্যে ) ।   খুব পরিচিত এই ফুল , নিটোল গোলাকার , প্রথমে সবুজ , পরে লাল থেকে টকটকে কমলা রঙের সাথে অসংখ্য লম্বা সাদা ফ্রিলস পুরো ফুল জুড়ে ।   হাতে নিলে বোঝা যায় বেশ একটু ভারী , মানে কাউকে ঢিল ছুড়ে মারার মতো আর ওই সাদা ফ্রিলস গুলো এমনিতে নরম কিন্তু ছুড়লে হুঁহুঁ , লাগবে বেশ। খুব মিষ্টি একটা গন্ধ আছে , গাছের পাস দিয়ে গেলেই টের পাওয়া যায় ফুল ফুটেছে   ( কদম তলায় কে ?) । প্রচুর ফ্র্যাংগনান্স বা আতর তৈরি হয় এই গন্ধের। আমাদের দেশের লিপিগুলোতে কদম ফুলের ও গাছের নাম আছে আর আমাদের পৌরাণিক কথকথায় কদম ফুলের বড়ো মুখ্য একটা জায়গা আছে।   ভারতের উত্তর দিকে , ভগবৎ পুরান থেকে শুরু রাধা ও কৃষ্ণের দুজনের জীবনেই   কদম ফুল বেশ গুরুত্বপূর্ণ।   বৃন্দাবন - মথুরায় , গোবর্দ্ধন পাহাড়ের দিকে   প্রচুর কদম গাছ , এই সময় মানে বর্ষাকালে একবার রাধে - রাধে

My days in the Gunj

এখানে সকাল হয় না, সকাল আসে... কার লেখা, কোন উপন্যাস, অনেকেই জানেন।  গল্পটা এরকম... ডিসেম্বরে হুট্ করে বাইক নিয়ে কোথাও যাওয়া যায় ঠিকই, কিন্তু থাকার জায়গা পেতে চাপ হয়। যেমন এবার হোলো ! ম্যাপ খুঁজে খুঁজে হোমস্টে দেখছি আর ফোন করে যাচ্ছি, ' নাহঃ, ওই সময় ফাঁকা নেই', বেশ কয়েক জায়গা থেকে এক উত্তর পেয়ে ভাবছি কি করবো ! তখনই আমায়রা হোমস্টে-র ওনার রাজ কিশোর গুপ্তা রিং ব্যাক করে 'ম্যাক গার্ডেন-র' হোমস্টে-র কেয়ার টেকার মনজয় দার ফোন নম্বর দিলেন। কল করে জানালাম, পরের দিন যাচ্ছি, একটা ঘরই আমার লাগবে। দু-তিন থাকবো বলাতে বললো, দুদিনই হবে তিন নম্বর দিন অলরেডি বুকড। সাত একর জমির এক কোণে এক কোলোনিয়াল বিল্ডিং, মানে টালির ছাদের কুঁড়েঘর। আম বাগানে ঘেরা, বিরাট এক লন সামনে। গেটের ডানদিকে আলু, সর্ষের খেত। টিয়া, ধূসর রঙের ধনেশ চোখের সামনে নেচে বেড়াচ্ছে। বাড়ির ভেতরে তিনটে পার্টিশন, প্রথম দরজা দিয়ে ঢুকেই বসার জায়গা আর দুই প্রান্তে দুটো ঘর। ওই জায়গা পেরিয়ে পেড়িয়ে আবার আর একটা দরজা ও দুই প্রান্তে ডান দিকে-বাঁদিকে দুটো ঘর। মাঝের বসার জায়গায় একটা ফায়ারপ্লেস। শীতকালে গেলে দিব্বি জ্বালিয়ে রাত কাটানো য

My days in the Gunj 2

Since couple of months planning to go in the Gunj but due to some other directions wasn't able to reach there. Finally at the end of year 2023 reached there, stayed in the colonial hut and explored the place on my motorcycle. The Gunj means the McCluskieganj, during mid nineties this hamlet was known as Mini England as it was the place for Anglo-Indians. But now only few family of Anglo-Indians are living here. Yeah, here is scope to stay in the colonial tiles hut as few of the homes are still maintaining the traditional home. I reached on 22nd of December, and had an advanced booking as this time become so crowded due to the holiday and festive season. While I was looking for my stay in Gunj as I used to do getting the contacts from google and calling them. Most of the homestay were not vacant on the dates which I decided to be there, but from the owner of Amyra homestay got a contact of Manojay the care taker Mac Garden and for 2 days he has a room. Here is a story, Mr. Raj Kisho